করোনাঃ
করোনাভাইরাস রোগ (কোভিড -১৯) একটি
সংক্রামক রোগ যা সদ্য আবিষ্কৃত করোনা ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতি:
বর্তমান করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সকলেই কম-বেশি অবগত আছি, এ নিয়ে আর খুব বেশি নতুন কিছু বলার নেই। গোটা বিশ্ব আজ করোনা প্রভাবে দিশাহারা হয়ে গেছে। পুরো বিশ্বে ০১-১০-২০২০ তারিখ পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষ্য ১৯ হাজার ১৮৬ জন মানুষ করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিলে সামিল হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশও করোনা ভাইরাসের প্রভাবে প্রায় অচল হয়ে গেছে। দেশ ও গোটা জাতির স্বার্থে সরকার দীর্ঘ সময় যাবত লকডাউন করতে বাধ্য হয়েছে। লকডাউন ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বা হচ্ছে সমাজের একেবারে নিম্ন আয়ের মানুষেরা, বিশেষত যারা দিনমজুর ও ভিক্ষুক। কোন কাজ করতে না পারায় সুবিধা বঞ্চিত এসব মানুষদের এক বেলার খাবার যোগাড় করাই এখন দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। এছাড়াও মধ্যবিত্ত অনেক পরিবারও বেকায়দায় আছে, কারণ তারা কারও কাছে চাইতে পারেনা সম্মানের কথা চিন্তা করে।
করোনা একটি প্রাণঘাতী ভাইরাস। অনেকে এটাকে বলে মেইড ইন চায়না। আবার কেহ কেহ বলে প্রাকৃতিক। সর্ব প্রথম এই ভাইরাসটি সনাক্ত করেন David Tyrrell .২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনের উহান শহরের একটি পাইকারী খাদ্যের বাজারে প্রথম এই ভাইরাসের সংক্রমন ধরা পরে। এরই মাঝে মাত্র ৬ মাসের ব্যবধানে পৃথিবীর ২১৩ টি দেশ এবং অঞ্চলে এর সংক্রমন বিস্তার লাভ করেছে।এ পর্যন্ত সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৪১ লক্ষ ৮৭ হাজার ১৫৪ জন (০১-১০-২০২০ তারিখ পর্যন্ত) এবং মৃতের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ্য ১৯ হাজার ১৮৬ জন ।
কোন ব্যক্তির জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা সাথে হাঁচি ৩ দিনের বেশী থাকলে প্রাথমিক ভাবে বলা যায় তার করোনা ভাইরাস পজিটিভ হতে পারে। আবার পরীক্ষা করালে তা নাও হতে পারে। উল্লেখিত উপসর্গ ছাড়াও করোনা পজিটিভ হতে পারে। কারণ এ ভাইরাসটি স্থান -কাল-পাত্র ভেদে তার গতি প্রকৃতি পরিবর্তন করতে পারে ।এমন আক্রান্ত অনেক রোগী দিব্যি চলাফেরা করছেন একজন সুস্থ্য স্বাভাবিক মানুষের মত। সে জানতেও পারে না যে সে করোনা ভাইরাস বয়ে বেড়াচ্ছে ! এই ধরনের করোনা রোগী হল সবচেয়ে মারাত্মক। তাদের সাথে যত লোক মেলামেশা করছে তত লোক নিজের অজান্তেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পরছে। তাই আমাদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি নিষেধ মেনে চলা উচিত ।
সচেতনতা ও অসচেতনতাঃ
একদিন টেলিভিশনে দেখলাম ব্যাংকের এক কর্মকর্তা হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক, চোখে চশমা দিয়ে বসে আছেন। যখনই কোন কাষ্টমার তার কাছে চেক দিচ্ছে তখন সে এটা হাত দিয়ে ধরছে না; একটা মিষ্টি উঠানোর চিমনি দিয়ে ধরে ভিতরে নিয়ে একটি সমতল জায়গায় রাখছে এবং একটি ইস্ত্রী মেশিন দিয়ে এপিঠ-এপিঠ হিট দিচ্ছেন। পরে হাত দিয়ে ধরে স্বাক্ষর করে টাকা দিচ্ছে। কলমটার কথাতো ভুলেই গিয়েছিলাম! সে কলমটিকেও লিকুইড স্যানিটাইজার দিয়ে স্প্রে করে নিলেন। দেখে আমি স্যালুট জানালাম ব্যাংক কর্মকর্তাকে। আমার কাছে মনে হয়েছে এ ভদ্রলোক নেহায়েত কর্তব্যের খাতিরে অফিসে এসেছেন। নতুবা সে না খেয়ে থাকলেও ঘর থেকে বের হতেন না।এমন অনেক সচেতন লোক আছেন যারা এ লক-ডাউনের সময় এক দিনের জন্যও ঘর থেকে বের হননি। ব্যবসা-বানিজ্য , রাজনীতি যা-ই হউকনা কেন সব কিছু হবে জীবন বাঁচানোর পর।কারণ এই পৃথিবীতে জীবনের চেয়ে মূল্যবান আর কিছু নেই। পক্ষান্তরে এমন অনেক লোক আছেন যারা হরধম ঘুরে বেরাচ্ছেন স্বাস্থ্য সুরক্ষার বালাই না মেনে। আর এ রকম লোকগুলোর কারণেই আজকে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি এত ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। সরকার এবং তার বিভিন্ন এজেন্সী মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চালাতে আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছে । কিন্তু কে শুনে কার কথা? সবাই দল বেঁধে চলে বাজার করতে এবং চায়ের স্টলে একই পাত্রে
সবাই চা পান করে। একবারও ভাবলেননা, যে কোন সময় অদৃশ্য শক্তি( করোনা ভাইরাস) আক্রমণ করতে পারে। প্রকাশ্য শত্রুকে মোকাবিলা করা যায় বা তা থেকে নিজেকে আত্মরক্ষা করা যায়। কিন্তু অদৃশ্য শক্তি কোথায়, কখন, কিভাবে আক্রমণ করে তা কোনভাবেই বোঝার উপায় থাকে না।
আমার ভাবনায় করোনা ভাইরাসঃ
আমার মতে করোনা ভাইরাস হল এখন বিশ্বে “সুপার পাওয়ার” কারণ এর প্রতাপের কাছে আমেরিকা, ইউরোপ, চীন, জাপান, রাশিয়াসহ অনেক প্রভাবশালী রাষ্ট্র কুপোকাত । ৭ মাস পার হয়ে গেল এর রেষ টেনে ধরতে পারলনা কোন রাষ্ট্রই। না পারল কোন ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে। ভাইরাসের সাথে না পেরে শুরু হয়েছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র্রের বিষোদগার । কেউ বলছে চীন এই ভাইরাস আবিষ্কার করেছে, আবার কেউ বলছে আমেরিকা করেছে। শুধু বলাবলিতেই ক্ষ্যান্ত হননি ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা ও করেছে আন্তর্জাতিক আদালতে।
0 Comments